গ্রিন টি পানের উপকারিতা
লাইফস্টাইল ডেস্ক : ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য চা ও কফির পরে সারা বিশ্বজুড়েই রয়েছে গ্রিন টি’র কদর। পানী হিসেবে সারা বিশ্বে চা কফির পর সবচেয়ে বেশি যে গ্রিন টি বিক্রি হয় তা বললে ভুল হবে না। শুধুমাত্র ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য না সুস্বাস্থ্যের জন্যও গ্রিন টি অনেক উপকারী।
গ্রিন টি হজমে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেই সাথে মনকেও প্রফুল্ল রাখে। গ্রিন টির এত উপকারিতার কথা ভেবে অনেকেই সারাদিন গ্রিন টি পান করেন। আবার অনেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও গ্রিন টি খান। বেশিরভাগ মানুষেরই একটি ভুল ধারণা হলো যত বেশি গ্রিন খাওয়া যাবে তত তাড়াতাড়ি ওজন কমবে।
প্রথমে যে বিষয়টি ভালো ভাবে বুঝতে হবে তা হলো গ্রিন টি চা কফির চেয়ে ভালো হলেও সারাদিন যখন ইচ্ছা তখন গ্রিন টি খাওয়া যাবে না। সময়ের উপর ভিত্তি করে গ্রিন টি খাওয়ার প্রতিক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন হয়।
- গ্রিন টি কেন খাবেন?
গ্রিন টিতে রয়েছে ফ্লেভোনয়েড নামক একটি উপাদান, যা আসলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি এমন একটি শক্তিশালী উপাদান যা সব দিক থেকে শরীরকে চাঙ্গা রাখে। গ্রিন টি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া কেটেচিন নামেও একটি উপাদান থাকে এই চায়ে, যা ভিটামিন ‘ই’ ও ‘সি’-এর থেকেও বেশি শক্তিশালী, যা শরীরে প্রবেশ করে একাধিক উপকার করে।
গ্রিন টি খেলে ওজন কমে।তবে কীভাবে খেলে ওজন কমে তা হয়তো অনেকে জানেন না।আসুন জেনে নেই কীভাবে গ্রি টি খেলে কীভাবে আপনার ওজন কমবে।
- গ্রিন টি খাওয়ার উপযুক্ত সময় ,
গ্রিন টি থেকে উপকার পেতে হলে সঠিক সময়ে গ্রিন টি পান করতে হবে। গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে খালি পেটে এবং ব্যায়াম করার আগে। গ্রিন টির মাধ্যমে সকাল শুরু করলে পুরো দিনই আপনার মেজাজ ফুরফুরে থাকবে। গ্রিন টি বা কফি দুটোতেই ক্যাফেইন ও থিয়েনিন রয়েছে। এই দুইটির সমন্বয় মন মেজাজ দুইটিই ভালো রাখে।
আর আপনার যদি লক্ষ্য থাকে ওজন কমানো তবে শরীর চর্চা করার আগেই গ্রিন টি পান করতে হবে। সেক্ষেত্রে শরীর থেকে দ্রুত ফ্যাট বার্ন হবে।
১. সকালের নাশতার পর গ্রিন টি খেতে পারেন।এতে সারাদিন শরীর ভালো থাকবে।
২. রাতে ঘুমাতে বিছানায় যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে গ্রিন টি খেতে পারেন।এ সময় গ্রিন টি খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৩.ব্যায়াম করার আধা ঘণ্টা আগে গ্রিন টি খেলে আপনার কর্মদক্ষতা বাড়বে। ফলে ওজন এবং মেদ কমাতে সাহায্য করবে।
৪. খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পরে অথবা আগে গ্রিন টি পান করুন।
- গ্রিন টি খাওয়ার অনুপযুক্ত সময় ,
খাবারের পর আমরা অনেকেই এক কাপ গ্রিন টি খায়। কিন্তু খাওয়ার পর এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্রিন টি শরীরে উল্টো ক্ষতি ডেকে আনে। খাওয়ার পর পর গ্রিন টি খেলে খাবারের যেসব উপাদান রয়েছে তা শরীর শোষণ করতে পারে না। ফলে প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি থেকে যায়।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্রিন টি পান করলে যে ক্যাফেইন রয়েছে তাতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ,অবসাদের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে গ্রিন টিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ চা কফির তুলনায় অনেক কম। ২৩০ মিলিগ্রাম গ্রিন টিতে ২০ থেকে ৪৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন রয়েছে যা চা কফির তুলনায় কম।
১. সকালে খালি পেটে গ্রিন টি ভুলেও খাবেন না।
২. খাওয়ার পরেও গ্রিন টি খাবেন না।
৩. ঘুম নিয়ন্ত্রণে গভীর রাতে গ্রিন টি পান করবেন না।
- যেভাবে গ্রিন টি আরও বেশি স্বাস্থ্যকর বানানো যায় ,
গ্রিন টি এমনিতেই শরীরের জন্য উপকারী। আপনি চাইলে এর গুণাগুণ আরও বাড়াতে পারেন। গ্রিন টি যে পানিতে করবেন তা অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম কোনটাই হবে না। পানির তাপমাত্রা হবে ১৬০ থেকে ১৮০ ডিগ্রি। পানিতে ২ থেকে ৩ মিনিটের বেশি গ্রিন টি রাখা ভালো হবে না। ১৭৭ মিলিলিটার পানিতে ২ গ্রাম গ্রিন টি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি চাইলে সাথে লেবুর রস,পুদিনা পাতা, ১ চা মধু যোগ করে নিতে পারেন।