chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ইয়াবার গডফাদারদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে নেপথ্যের রাঘব বোয়ালদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। আজ বুধবার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক  টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।  চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এর সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, র‌্যাবের ডেপুটি সিইও, বিজিবির আঞ্চলিক কমান্ডার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ টাক্সফোর্সের অন্যান্য সদস্যগণ জুম এ্যাপসের মাধ্যমে সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় জানানো হয়, ইয়াবা ব্যবসার নেপথ্য নায়কদের সনাক্ত করতে ইতোমধ্যে সন্দেহজনক লেনদেন নিয়ে কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। সহায়তা নেওয়া হবে চেম্বারসমূহের। সভায় অংশগ্রহনকারীরা বলেন, সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান ধরা পড়ায় প্রমাণিত হয় এতে বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা সক্রিয় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন পথ ঘুরে ইয়াবার অর্থ মিয়ানমারে পৌঁছায়। তাদের মূলোৎপাটনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারলেই ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে।

সভায় ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও সীমান্ত চোরাচালানের বিষয় ওঠে আসে। ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে আরো কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায় এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম সভার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত কৌশলে কোনো ঘাটতি আছে কীনা অথবা কার্যকর প্রতিরোধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কীনা এ বিষয়ে আলোচনা দাবি করেন।

সভায় রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলায় পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। যৌথ কর্মপন্থা ঠিক করতে বিজিবির সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে এবং টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বিজিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার সভায় জানান, বিজিবির প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়ন পূর্বের তুলনায় আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার ফলে সম্প্রতি ইয়াবার বেশ কিছু বড় বড় চালান আটক করা সম্ভব হয়েছে। নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন।

বিজিবির কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার সভায় জানান, ইয়াবা চোরাচালান আটক প্রতিমাসেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা হ্রাস করতে না পারলে ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধ কষ্টকর হয়ে পড়বে । তিনি সভাকে আরো অবহিত করেন, ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত স্থানীয়রা বিজিবির পেট্রোল টহলের গতিবিধি চোরাচালানীদের তাৎক্ষনিক জানিয়ে দেওয়ায় অনেক সময় নিশ্চিত চোরাচালানও আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কাজে তারা মিয়ানমারের মোবাইল সিম ব্যবহার করে।

তিনি আরো জানান, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঘুনধুম-বাইশপাড়ি সীমান্তে ১০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, টেকনাফ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ নির্মাণ শেষ হলে সেখানেও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে।

সভায় কোস্টগার্ডের কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার জানান, নদীপথে চোরাচালান প্রতিরোধে টহল জোরদারের ফলে সম্প্রতি বেশ কিছু চোরাচালান আটক করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে কোস্টগার্ড আকস্মিক অভিযান বৃদ্ধি করবে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন।

সভায় র‌্যাবের ডেপুটি সিইও জানান, ইয়াবা চোরাচালান প্রতিরোধে বহনকারীর পাশাপাশি সন্দেহজনক লেনদেন ও লেনদেনের নতুন নতুন কৌশল উদঘাটনে র‌্যাব কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্ত করা হয়েছে। সিএমপি কমিশনার সভায় বলেন, মাদকে অর্থ লগ্নীকারীদের সনাক্তে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে

সভাপতির বক্তব্যে  বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ইয়াবা চোরাচালানে অর্থ লগ্নীকারীদের আইনের আওতায় আনতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের কুফল নিয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে সকল বাহিনীর সমন্বিত পদক্ষেপ  নিতে হবে।

এসএএস/চখ

এই বিভাগের আরও খবর