দেশে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে আবারো এগিয়ে এলো এস আলম গ্রুপ
২০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির এলসি খুলল রোববার
নিজস্ব প্রতিনিধি : দেশে চলমান পেঁয়াজের সংকটে চাহিদা মেটাতে আবারও এগিয়ে এসেছে অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক করতে গতবারের মতো এবারও পেঁয়াজের এলসি খুলেছে দেশের বৃহৎ এ শিল্পগ্রুপটি।
প্রথম দফায় নেদারল্যান্ডস থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ এস আলম। এজন্য গত বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসে বুকিং কার্যক্রমও সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এক মাসের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসব পেঁয়াজ দেশের বাজারে ঢুকবে।
তবে চাহিদা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটি নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, মিসরসহ পৃথিবীর আরো কয়েকটি দেশ থেকে এক লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, দেশের সংকট মুহুর্তে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে চাহিদা অনুযায়ী আমাদের গ্রুপ (এস আলম) বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করার চিন্তাভাবনা করছে।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আমাদের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ স্যার। পেঁয়াজ যাতে নষ্ট না হয় এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজারের চলমান সংকট দুর করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনে কার্গো বিমানে পেঁয়াজ আনার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
তার নির্দেশনায় আজ রোববার প্রথম দফায় ২০ হাজার টন পেঁয়াজ আনতে এলসি খুলেছে এস আলম গ্রুপ। আগামী এক মাসের মধ্যে নেদারল্যান্ডস থেকে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বিমান বন্দর হয়ে দেশের বাজারে ঢুকবে এসব পেঁয়াজ। বড় শিল্প গ্রুপের আমদানিকৃত পেঁয়াজগুলো ভর্তুকি মূল্যে টিসিবিকে দিয়ে সারাদেশে বিক্রি করা হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাহউদ্দিন আহম্মদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, পেঁয়াজের বাজার যাতে অস্তিতিশীল না হয় এবং সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায্য মূল্যেই পেঁয়াজ কিনতে পারে সে লক্ষ্যেই বরাবরের মতো এস আলম গ্রুপ পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য ব্যাংকে আজ এলসি খোলা হচ্ছে। এই এলসি’র অনুকুলে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ বোঝাই জাহাজ অক্টোবর মাসের শুরু থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসতে শুরু করবে। ধারাবাহিকভাবে এবং চাহিদা বিবেচনায় কমপক্ষে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে এস আলম গ্রুপ।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ সংকট দ্রুত নিরসনকল্পে প্রয়োজনে কার্গো বিমানে পেঁয়াজ এনে পরিস্থিতি সামালে ভূমিকা রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ।
জানা যায়, দেশে বর্তমানে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা আছে আনুমানিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে বাকি পেঁয়াজগুলো আমদানি হয় বিভিন্ন দেশ থেকে। তবে আমদানির বেশির ভাগ পেঁয়াজই আসে ভারত থেকে। মিয়ানমার ও চীন থেকেও কিছু পেঁয়াজ দেশে আসে।
ভারত সম্প্রতি পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে তীব্র সংকট দেখা দেয়। গতকয়েক দিনের ব্যবধানেই কেজি প্রতি পেঁয়াজের দর বেড়ে যায় দুই থেকে তিন গুণ।
এ পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশে সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আরও পেঁয়াজ আমদানি করবে এস আলম গ্রুপ। এমনটই জানিয়েছেন শিল্পগ্রুপটির কর্মকর্তারা।
চখ/রাজীব