chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চসিকের শ্রমিক কর্মচারীরাই আমার কন্ঠস্বর : সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, চট্টগ্রামকে একটি বাসযোগ্য ও মানবিক নগরীতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া হাতে নিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্রতী হয়েছি, এতে যতটুক সফল হই তা আগামীতে যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন তাঁদের চলার পথ সুগম করবে।

শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনের কে.বি.আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিক শ্রমিক কর্মচারী লীগের সাথে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

এ সময় চসিক শ্রমিক-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে সুজন বলেন, নগরীর ৬০ লাখ মানুষের সেবা দিতে গিয়ে যারা শ্রম বিক্রি করছেন তারা আমার কাছে শ্রেষ্ঠ মানুষ। যারা শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় রাত-দিন পরিশ্রম করে এ নগরীকে পুত:পবিত্র ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন তাদের প্রতি রইল আমার অন্তর নিংড়ানো ভালোবাসা। তাদের কর্মকান্ডকে আমি স্যালুট জানাই। সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক কর্মচারীরাই আমার কন্ঠস্বর এবং আমারই অঙ্গ। সাবেক মেযর এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী চসিক পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সেবকের মর্যাদা দিয়েছেন, সেই মর্যাদাকে আমি ধরে রাখবো। শ্রমিক কর্মচারীরা মূল্যায়িত হলে আমি কৃতার্থ হবো।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে ডোর-টু-ডোর শ্রমিকদের একটি অংশ কাজ না করেও হাজিরা দিতো-এটাকে আমি অপকর্মই বলবো। দু:খ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হয় সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজে যারা ইট-বালু-পাথর-সিমেন্ট সরবরাহ করতো তাদের পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় তারা নির্মাণ ঠিকাদারদের মালামাল পর্যন্ত দিতে চায় না। তাই কর্পোরেশনের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে এ ব্যাপারে ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। প্রশাসক চসিক শ্রমিক-কর্মচারীদের উত্থাপিত দাবীগুলো যৌক্তিক বলে অভিহিত করে বলেন, বর্তমানে আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় দাবীগুলো এখনই পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এজন্য একটি সুপারিশ আমি করে যাব।

তিনি জানান, ইতিমধ্যে গত মাসের প্রথম তারিখ শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করেছি। আগামীতেও শ্রমিক-কর্মচারীরা যাতে মাসের প্রথম তারিখ বেতন পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যারা অবসরে গেছেন তাদের ক্রমানুসারে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুঃখ আমি হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করি।

প্রশাসক করোনাকালে নগরীর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, চিকিৎসাসেবা এবং ত্রাণ বিতরণে চসিকের মোট জনবল যেভাবে অবদান রেখেছে তারা বিশেষভাবে মূল্যায়িত না হলেও আমি স্বীকার করি এই দূর্যোগকালীন সময়ে তারা একটি মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে।

তিনি আরো বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের শীত-বর্ষাসহ মৌসুমী পোষাক ও সরঞ্জাম পাওয়ার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি পর্যায়ক্রমে অন্যান্য চাহিদাও পূরণ করা হবে। তবে পরিস্কার করে বলতে চাই কর্পোরেশনের কার্যক্রমে কোন ধরনের অনিয়ম কিংবা দূর্ণীতি বরদাস্ত করা হবে না।

তিনি আবেগতাড়িত কন্ঠে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে পবিত্র মক্কা শরীফে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হজ্বব্রত পালনকারীদের নানাভাবে সেবাদান করেছি। এটা আমার মানবিক ও নৈতিক কর্তব্য ছিল। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি তিনি যেন আমাদের প্রত্যেককে শুদ্ধাচারী জীবন-যাপন করার তৌফিক দান করেন। তাই আমি চসিক শ্রমিক কর্মচারীদের বলতে চাই আপনারা শুদ্ধাচারী জীবনযাপন করুন এবং পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে আপনাদের যেন কোন কলঙ্ক স্পর্শ না করে।

মতবিনিময় শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন চসিক শ্রমিক কর্মচারী লীগ সভাপতি ফরিদ আহমদ, জাহেদুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী প্রমূখ।

এছাড়া প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেমসহ শ্রমিক কর্মচারী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

এসএএস/ এএমএস

এই বিভাগের আরও খবর