chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

এক নজরে আল্লামা শাহ আহমদ শফী

নিজস্ব প্রতিবেদক : আল্লামা শাহ আহমদ শফী একজন ইসলামি ব্যক্তিত্ব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির।

আজ শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো দীর্ঘ ১০৫ বছরের জীবন।

তিনি বাংলাদেশের ইসলামি শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের একজন ছিলেন যিনি আল্লামা শাহ আহমদ শফী বা আল্লামা শফী নামে পরিচিত। বহুল চর্চিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও আমির ছিলেন তিনি।

একইসঙ্গে ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি আল জামেয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসার (হাটহাজারী মাদ্রাসা নামে পরিচিত) মহাপরিচালক ছিলেন।

আল্লামা শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদরাসায় পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদরাসা এবং হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার পর ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসাতেও চার বছর লেখাপড়া করেন।

১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন তিনি। এরপর থেকে টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি ওই পদে ছিলেন।

আল্লামা শাফী ২০০৯ সালে আজিজুল হক ও অন্যান্য সিনিয়র ইসলামী ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন যেখানে, ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গি কার্যক্রমের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। ২০১০ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলায় ১৩টি ও উর্দুতে নয়টি বইয়ের রচয়িতা তিনি। আলেমদের বড় একটি পক্ষের কাছে খুব শ্রদ্ধার পাত্র। তবে নারীবিরোধী নানা বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন সময় হয়েছেন সমালোচিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে তিনি বেশি আলোচনায় আসেন।

বার্ধক্যজনিত কারণে অনেক দিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি। গত কয়েক বছরে তিনি বেশ কয়েকবার দেশ ও বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

সর্বশেষ গত জুনে শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয় আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী। রাতে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মেডিক্যাল বোর্ড বসান। তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দুপুরের দিকে চিকিৎসকরা তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চমেক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, আল্লামা শফীর অবস্থা সংকটাপন্ন। বৃহস্পতিবার হার্টে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। একই সঙ্গে ফুসফুসে পানি জমেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

১০৫ বছর বয়সী এ প্রবীণ আলেম ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ফলে প্রায়ই ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

গত কয়েক মাসে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিলে একাধিকবার চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা নিতে হয় বড় হুজুরখ্যাত আল্লামা শফীকে।

এসএএস/

এই বিভাগের আরও খবর