chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অবশেষে বার্সা ছাড়ছেন মেসি

ডেস্ক নিউজ: চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে বায়ার্নের বিপক্ষে ৮-২ গোলের লজ্জার পরই গুঞ্জন উঠেছিল মেসির বার্সা ছাড়ার । এবার সেই ‍গুঞ্জনই সত্যি হলো। একে একে ১৭টি পেশাদার মৌসুম কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন— অনেক হয়েছে, আর নয়। যে ক্লাবের নামের সঙ্গে সঙ্গে সমার্থক হয়ে পড়েছিলেন, সেই বার্সেলোনা এফসি’কে বললেন বিদায়।

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কা এ খবর দিয়েছে। পত্রিকাটি লিখেছে, মেসি ক্লাবকে একটি ফ্যাক্স বার্তায় জানিয়ে দিয়েছেন ক্লাব ছাড়ার এই খবর।

এর আগে মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার চুক্তিতে শর্ত ছিল, ২০১৯/২০ মৌসুমের শেষে ইচ্ছা করলেই ক্লাব ছাড়তে পারবেন তিনি। এর জন্য কোনো পয়সা গুনতে হবে না। ক্লাবকে সেই শর্তের কথাই মনে করিয়ে দিয়ে নিজের ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়েছেন।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটে বায়ার্নের বিরুদ্ধে বার্সেলোনার ভরাডুবির পর সব দোষ এসে বর্তায় মেসির কাঁধে। ওই ভরাডুবির জের ধরে এরই মধ্যে ক্লাবের প্রধান কোচ কিকে সেতিয়েন ও স্পোর্টিং ডিরেক্টর আবিদালকে বরখাস্ত করেছে বার্সা। নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রোনাল্ড কোম্যানকে। ডাচ এই কোচ দায়িত্ব নিয়ে মেসির সঙ্গে এক দফা বৈঠকও করেছেন। তবে সেখানেও বেঁধেছ ঝামেলা। মেসির সঙ্গে কোম্যানের কী কী আলোচনা হয়েছে, তা সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করায় চটেছেন মেসি।

এর আগে করোনা মহামারির শুরুর দিকে ক্লাবের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমাতে খেলোয়াড়দের বেতন কমানোর আলোচনা নিয়েও বোর্ডের সঙ্গে মনকষাকষি হয়েছিল মেসির। স্পোর্টিং ডিরেক্টর আবিদাল খেলোয়াড়দের নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সরাসরি সমালোচনা করেছিলেন। সে ঘটনাতেও রাগ করেছিলেন মেসি। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার বর্তমান বোর্ডের সঙ্গে যেন কোনোভাবেই মানিয়ে নিতে পারছিলেন না এই আর্জেন্টাইন ক্ষুদে জাদুকর। আর তারই চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে ক্লাব ক্যারিয়ারে বার্সায় ইতি টানলেন।

এদিকে, মেসির ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তে নড়েচড়ে বসেছে বার্সেলোনা বোর্ড। স্প্যানিশ গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, বার্সেলোনা বোর্ড এরই মধ্যে জরুরি বৈঠক ডেকেছে।

শুরুটা তো সবারই জানা। লিওনেল মেসি আসলেন, খেললেন আর তার জাদুতে মোহিত করলেন গোটা ফুটবল বিশ্বকে। ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বার্সেলোনার বোর্ড ডিরেক্টর কার্লে রেক্সাহ টিস্যু পেপারে মেসিকে ক্লাবে ভেড়ানোর জন্য চুক্তি করেন। এরপর ২০০১ সালে মেসির পরিবার বার্সেলোনায় আটঘাট বাঁধে। আর এরপরেও গল্প সবার চিরচেনা।

মেসির উত্থানটা যেন জাদুর মতো। একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়ে বার্সার প্রথম দলে সুযোগ করে নেন খুব দ্রুতই। ২০০৪/০৫ মৌসুমেই লিওনেল মেসির বার্সেলোনার প্রধান দলে অভিষেক। সেবার অবশ্য মেসি খেলেছিলেন মাত্র ৭টি ম্যাচে আর করেছিলেন একটি গোলও। এরপর কেটে গেছে একে একে ১৭টি মৌসুম, মেসি বার্সার জার্সি গায়ে খেলেছেন মোট ৭৩১টি ম্যাচ, করেছেন ক্লাবের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৬৩৪টি গোল এবং ২৮৫টি অ্যাসিস্ট।

এই সময়ে ক্লাবের হয়ে সম্ভাব্য সকল শিরোপা জিতেছেন লিওনেল মেসি। এর মধ্যে রেকর্ড দুইবার ইউরোপিয়ান ট্রেবল এবং একবার জিতেছেন এক মৌসুমের সর্বোচ্চ ছয়টি শিরোপাও। ব্যক্তিগত অর্জনেও লিওনেল মেসি ছাড়িয়ে গেছেন বিশ্বের বাকিদেরও। জিতেছেন রেকর্ড ছয়টি ব্যালন ডি অর। আর ১৭ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন এবার।

এমআই/

এই বিভাগের আরও খবর