chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সত্য ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তর-পরবর্তী ২১ বছর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদানসহ তার নাম মুছে ফেলার নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল।

কিন্তু মিথ্যা দিয়ে কখনও সত্য ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, এটা আজ প্রমাণিত। বুকের রক্ত দিয়ে যারা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিলেন, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। লাখো শহীদের সেই আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না। আমরা বৃথা যেতে দেব না। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। শনিবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

মুজিববর্ষকে সামনে রেখে দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের একটি লোকও গৃহহারা থাকবে না। নেতাকর্মীদের দায়িত্ব হল নিজ নিজ এলাকায় গৃহহারাদের খুঁজে বের করা। তিনি বলেন, গৃহহীনদের তালিকা তৈরি করুন, প্রত্যেককে ঘর করে দেয়া হবে। সবার একটা ঠিকানা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষে আমরা দেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত করব।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মুশতাক-জিয়া জড়িত উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানের শাসকরা বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিতে হত্যার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। কিন্তু স্বাধীনতার পর পরাজিত শত্রুরা এদেশীয় দালালদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার নাম পর্যন্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সত্য ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না, মিথ্যা দিয়ে কখনও সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না- এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়; আমরা প্রযুক্তিগত শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে আমরা দেশের মানুষকে গড়ে তুলতে চাই। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিগত জ্ঞান নিয়ে বিশ্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলব।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জনে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। বাংলাদেশ মানেই তাদের কাছে ছিল দারিদ্র্যপীড়িত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা-জলোচ্ছ্বাসকবলিত গরিব দেশ। কিন্তু এখন আর কারও সেসব কথা বলার সুযোগ নেই। মাত্র এক দশকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল, মর্যাদাশীল দেশ। খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত, ঘূর্ণিঝড়-বন্যাসহ সব দুর্যোগ মোকাবেলা করতে আমরা শিখেছি।

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে, তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। এটাই সব থেকে বড় পাওয়া। চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের কথা তুলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১টি বছর জাতির পিতাকে ইতিহাস থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছিল। পরে ২০০১ থেকে পাঁচটি বছর বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় আসে, তখনও আবার বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সত্যকে কেউ কখনও মুছে ফেলতে পারে না।

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভার শুরুতেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক-গবেষক হায়দার আলী খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জামান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আবু আহম্মেদ মান্নাফী। ভাষা শহীদদের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত।

আলোচনা সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

এই বিভাগের আরও খবর