chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বীর বিক্রম আবদুল খালেকের মৃত্যু

ডেস্ক নিউজ: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা বীর বিক্রম আবদুল খালেক আর নেই। বুধবার (৩০ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় ৫০ বছর পর বীর বিক্রম খেতাব পান আবদুল খালেক।

বীর বিক্রম আবদুল খালেকের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চাপাল গ্রামে। করোনার উপসর্গ নিয়ে সোমবার (২৭ জুলাই) তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়নি।

গত ৬ জুন নতুন প্রকাশিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে তার নাম ওঠে। গেজেট বিভ্রাটের কারণে তার বীর বিক্রম স্বীকৃতি পেতে বিলম্ব হয়েছে।

আবদুল খালেকের বড় ছেলে মাসুম আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে ভর্তির তিন-চারদিন আগে তার বাবার জ্বর ও কাশির সমস্যা দেখা দেয়। গত রোববার (২৬ জুলাই) রাতে তিনি মাথাব্যথায় খুব কাতর হয়ে পড়েন। তাই সোমবার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আজ বাদ জোহর বাবার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ’

গেজেট বিভ্রাটের কারণে এতদিন বীর বিক্রম আব্দুল খালেক স্বীকৃতি পাননি। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত গেজেটে এক ধরনের এবং ২০০৪ সালের গেজেটে আরেক ধরনের ভুল। প্রথমবার লেখা হলো ‘এক্স নেভি’; পরেরবার সেনাবাহিনী। তার অফিয়াল নম্বরের শেষে ১৯ এর জায়গায় ভুলে লেখা হয়েছিল ৯১, যা ছিল পাঞ্জাবি সৈন্যের।

২০১১ সালে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঠিকানাবিহীন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে তার বাবার নাম, নৌবাহিনীর পদবি ও সার্ভিস নম্বর দেওয়া ছিল। তার ভিত্তিতে তারা গেজেট সংশোধন করার জন্য আবেদন করেন। সে আবেদন মন্ত্রণালয় থেকে হারিয়ে যায়। এভাবে অনেক ভোগান্তির পর গত বছর নতুন করে আবার আবেদন করেন। এরপর শেষ পর্যন্ত বীর বিক্রম স্বীকৃতি মেলে। তবে এতদিন পর এ স্বীকৃতিতে খুশি হতে পারেননি আবদুল খালেক।

মুক্তিযুদ্ধকালে গোদাগাড়ীর খেতুর গ্রামে সিরাজুল চেয়ারম্যানের বাড়িতে ছিল পাকিস্তানি হায়েনাদের ঘাঁটি। একাত্তরের ৩ সেপ্টেম্বর সেখানে গ্রেনেড হামলা করতে গিয়েছিলেন বীর সৈনিক আবদুল খালেক। কিন্তু গ্রেনেড ছোঁড়ার আগেই আহত হন তিনি। শত্রু বাহিনীর একটা গুলি তার বুক ভেদ করে চলে যায়। জীবনের মায়া ত্যাগ করে সাত নম্বর সেক্টরের আরও বেশকিছু সম্মুখ সমরে অংশ নেন এ বীর বিক্রম।

এমআই/