chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মঙ্গলবারের মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে পত্রিকা মালিকদের বাড়ি ঘেরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সাংবাদিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে পত্রিকা মালিকদের বাড়ি ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।

রোববার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবাদ সমাবেশে সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, পত্রিকার প্রচারণা এবং সাংবাদিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে মিথ্যাচার করে যুগের পর যুগ সরকারি বেসরকারি সব সুযোগ সুবিধা আদায় করছেন মালিকরা। মালিকরা মনে করেছেন তারা একজোট হয়ে সাংবাদিকদের বেতন বোনাস না দিয়ে পার পাবেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন তাদের এ ষড়যন্ত্র আর সফল হতে দিবে না।

তিনি আরও বলেন, যদি আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা না হয় তবে সাংবাদিক ইউনিয়ন পত্রিকা মালিকদের বাসায় বাসায় মাইক লাগিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। এরপরও যদি দাবি আদায় না হয় আরও কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সাংবাদিকদেও ন্যায্য পাওনা পরিশোধে মালিকদের বাধ্য করা হবে।

সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস, সিইউজে’র সাবেক সভাপতি শহীদ উল আলম, মোস্তাক আহমদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজে যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, সিইউজে সিনিয়র সহসভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো, অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইফতেখার ফয়সাল, সিইউজে সদস্য মুহাম্মদ মহরম হোসাইন, প্রতিনিধি ইউনিটের প্রধান সাইদুল ইসলাম, টিভি ইউনিটের প্রধান মাসুদুল হক, প্রতিনিধি ইউনিটের ডেপুটি চিফ সোহেল সরওয়ার, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সফিক আহমেদ সাজিব, সিইউজে সদস্য সুবল বড়ুয়া।

প্রতিবাদ সভায় বিএফইউজে সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, করোনার এই দুঃসময়ে সারাদেশে সাংবাদিকদের বেতন ভাতা নিয়ে প্রহসন চলছে। ঈদুল ফিতরের আগে অনেক সংবাদ মাধ্যম বোনাস দেয়নি। এখনও মহামারির সংকট দেখিয়ে ঈদুল আযহার বোনাস না দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এ সংকট মোকাবেলা করতে হবে।

এসময় সংবাদপত্র মনিটরিং সেলে চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় চট্টগ্রামসহ ঢাকার বাইরের গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস বলেন, সরকার বৈশাখী ভাতা দেয়ার নির্দেশনা দিল্ওে অধিকাংশ পত্রিকা ও টিভি মালিকরা তা অনুসরণ করেন না। সাংবাদিকদের নানা ধরণের প্রাপ্য থেকেও বঞ্চিত করা হয়। পাওনা না দিতে দিতে এখন তারা ঈদের মতো উৎসব ভাতা সাংবাদিকদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে, যা কোনভাবেই সফল হতে দেয়া যাবে না।

সিইউজে সাবেক সভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, সাংবাদিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ না করার দায় মালিকদের পাশাপাশি মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোক্ওে নিতে হবে। সম্প্রতি ডিএফপির দুইজন প্রতিনিধি চট্টগ্রাম এসে সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোন কথা না বলে কেবল মালিকপক্ষের মতামত নিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমদ বলেন, সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বেতনভাতা পরিশোধ না করে কেউ পার পাবে না। পত্রিকা মালিকরা যখন নানা সংগঠনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ, তখন সাংবাদিকদের বিভেদ থাকার সুযোগ নেই।

সমাবেশে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের যে কোন আন্দোলনে সিইউজের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। তিনি বলেন, কেবল বেতন-বোনাস নয়, সুরক্ষা সামগ্রী ভাতাসহ সাংবাদিকদের সকল অধিকার আাদায়ে নেতৃবৃন্দকে উদ্যোগী হতে হবে।

বিএফইউজে যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী বলেন, ৩০ বছর ধরে কোটি কোটি টাকা লাভ করা সংবাদ মাধ্যমের মালিকরা তিনমাস পত্রিকা না হওয়ার নামে সাংবাদিকদের পাওনা আদায় না করে ভিক্ষুকের মতো আচরণ করেছে। এ সংকটকালে সেরাদের সেরা স্লোগান দেয়া মূলধারার গণমাধ্যমগুলোও আন্ডারগ্রাউন্ডের ভুঁইফোড় পত্রিকার মালিকের মতো আচরণ করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য রুবেল খান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের দৈনিক পূর্বকোন ইউনিটের প্রধান মিহরাজ রায়হান, পুর্বদেশ ইউনিটের ডেপুটি প্রধান সাইমন চুমুক, সিইউজে’র সাবেক প্রচার সম্পাদক আহমেদ কুতুব, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারি রুনাসহ চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এমআই/

এই বিভাগের আরও খবর