chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

কবুতরের হাটের ইতিকথা

দুপুর গড়িয়ে বিকেল। আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ছে বাজারে।কেউ এসেছে শখ করে কবুতর কিনতে, কেউবা শখ করে পালন করা কবুতর বিক্রি করতে।এই চিত্র দেওয়ান হাট মোড়ে বসা কবুতরের হাটের।ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২০ বছর আগে থেকে এই বাজারের শুরু হয়েছিল। এখন নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবুতর কিনতে ভিড় জমায় ক্রেতারা।

এক সময় গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে কবুতর পালন করত মানুষ। ‘বাকবাকুম, বাকবাকুম’ ডাকে ডাকে মুখর থাকত গৃহস্থের বাড়ি।

আগে শহরেও শৌখিন মানুষের ঘরে দেখা যেত কবুতরের খোপ। এখন ইট-পাথরের এই শহরে বাড়িতে কবুতরের দেখা না মিললেও নগরীর দেওয়ানহাটে ‘কবুতরের হাট’ মন ভরিয়ে দেবে নাগরিকদের। এখানে শুধু ‘জালালী রসধমব’ কবুতর নয় আছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির হাজারও কবুতর। এসব কবুতরের নামও রকমারি যেমন সোয়াচন্দন, ময়ূরপঙ্খী, কিং কবুতর, লালসবুজ, নীলগলা, কার্জি বাংলা, গিরিবাজ, বাজরিকা, সিরাজ, ও চুল্লি ইত্যাদি। হাটে সবচেয়ে দামি কবুতর জাগোবিন। দাম প্রায় ৮ হাজার টাকা।সিরাজ নামের কবুতর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার দাম।

সপ্তাহের সোমবার আর বৃহস্পতিবার হাটের জৌলুস বাড়ে। কারণ এই দুদিন হাটে হাজারের বেশি কবুতর উঠে। দেওয়ানহাট মোড়ের পশ্চিম পাশের কোনায় এই হাট ঘিরে ক্রেতা ও দর্শনার্থীর ভিড় থাকে। হাটে প্রতিদিনই কবুতর নিয়ে মালিকরা হাজির হন। বিক্রেতাদের বেশিরভাগই শখের কবুতর বিক্রি করতে আসেন। এখানে পেশাদার কবুতর ব্যবসায়ীর সংখ্যা অতি নগন্য। কেউ কেউ আসে ব্যতিক্রমী এই হাট দেখতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতারা বেশ দরদাম করেই কবুতর কেনাবেচা করছেন। অনেকে চলার পথে হঠাৎ এমন আয়োজন দেখে অবাক হচ্ছেন। অনেকে শখের বসে দুয়েক জোড়া কবুতর কিনে নিয়ে বাসায় যাচ্ছেন। এক বিক্রেতা সিরাজ নামের কবুতরের দাম হাঁকালেন ৩ হাজার টাকা, আওয়াল দুই থেকে আড়াই হাজার। সোয়াচন্দন তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল, হলুদ ও কালো সিরাজের দাম ৩ হাজারের বেশি। কিং কবুতর ৫ হাজার, ময়ূরপঙ্খী  ২ হাজার, গিরিবাজ ১ হাজার টাকায় বিকিকিনি হচ্ছে। এছাড়াও বাজরিকাসহ আরো অনেক সাধারণ কবুতরের দাম পাঁচশ থেকে এক হাজারের মধ্যে রয়েছে।

বাজারে সবচেয়ে দামি কবুতর হলো জাগোবিন। বিক্রেতা যার দাম ধরেছে ৮ হাজার টাকা। এরপরেই থাকা আমেরিকান পেন্টেডের দাম উঠেছে ৬ হাজারের কাছাকাছি।

আবদুল্লাহ শখ করে কবুতর পালন করেছিলেন বাসায়। তিনি হাটে এসেছেন তার শখের কবুতর বিক্রি করার জন্য। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকে আমার শখ ছিলো কবুতর পালন করার। বিক্রি পাশাপাশি নতুন কয়েক জোড়া কবুতর কেনার কথাও জানান তিনি।

তিনি বলেন, আকাশে নতুন কবুতর উড়াতে বেশি ভালো লাগে। যেসব কবুতর কম উড়তে পারে সেগুলো বিক্রি করে দিই।

কবুতর কিনতে আসা সাইদ বলেন, কবুতর পালন করে শখের পাশাপাশি আয়ও বাড়ানো যায়। কবুতরের বাচ্চাও দামে বিক্রি করা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর