chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বাঁশখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এসবের সাথে জড়িত সকলের তালিকা নেওয়া হবে। কেউ ছাড় পাবেনা। আমরা জনগণের, জনগণের জন্যই সরকার বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার।

সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বাশঁখালী পূর্ব পুইছড়ি ইউনিয়ন পরিদর্শনে যান একটি প্রতিনিধি দল। তারা ফরেস্ট রোড হয়ে শাহাদত মার্কেট পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন। এসময় স্তুুপ করা বালুর দৃশ্যও দেখতে পান। এসময় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার এ বিষয়ে বলেন, প্রতিবছর সরকারিভাবে পূর্ব পুইছড়ি বালু মহাল ডাক হয়। কিন্তু এলাকার রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখে মহল ডাক সাময়িক স্থগিত হয়। কিন্তু ডাক না হলেও এলাকার কিছু লোক ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাস্তব চিত্র দেখতে পায়। এরপর এ বিষয়ে জড়িতদের সাবধান করে দেওয়া হয়।

মোমেনা আক্তার বলেন, কেউ অন্যায় করে পার পাবেনা। যেকোনো অপরাধকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।

বাশঁখালী থানার অফিসার ইমচার্জ ( ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, বালুর বিষয়টি আমাদের নয়। এরপরেও যদি এলাকার ক্ষতি হয় আমরা দেখবো। তিনি বলেন, যারা এসবের সাথে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে। অপরাধ করে কেউ রেহায় পাবেনা। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

অন্য একটি প্রসঙ্গে ওসি বলেন, এলাকার কিছু চিন্হিতের সতর্ক করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নিচ্ছি।

জানতে চাইলে পুইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানুল গণি চৌধুরী লেদুুু মিয়া বলেন, আমি সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে। অবৈধ বালু কারবারিদের অনেকবার সতর্ক করেছি। তারা একটি সিন্ডিকেট করে বালুু তোলে।

আপনিতো জনপ্রতিনিধি আপনার ভূমিকা আছে মর্মে তিনি বলেন, তাদের সাথে কিছু লেবাসধারি জড়িত আছে। যারা মানুষের সামনে সাধু সেজে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে জঘন্য অপরাধও করে। শুধু বালু নয়, তাদের কারনে উজাড় হয়েছে বনের গাছ। আমি তাদের বারণ করেছি। এরপরেও তারা বিভিন্ন অপরাধ করে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে সম্প্রতি জেল খেটে আসা কুখ্যাত ডাকাত সর্দার পুইন্যার ছেলে জসিম উদ্দিন ও মিন্টু এই অবৈধ বালুর মূল হোতা। তারা দিনে রাতে পূর্ব পুইছড়ি বিভিন্ন স্পট থেকে বালুু তোলে। এলাকার, শাহাদত মার্কেট, বছিরাবাড়ি, নাইতা বিল, দুছরিসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় থেকে তারা বালু তোলে। তাদের সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন, নুরুচ্ছফি, আবুল কাশেম প্রকাশ হাচু, আরশিয়া, ভুইশ্যাসহ আরও অনেকে।

একটি সূত্র জানায়, তাদের এই অপরাধ জগতের একজন গডফাদার রয়েছে। যিনি নেপথ্য থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

পুইছড়ি সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক জাতীয় সংগীত শিল্পী রবি চৌধুরী বলেন, আমি একজন শিল্পী মানুষ। এলাকাসহ পুরো বাংলাদেশ আমাকে চেনে। আমি যখন এলাকায় আসি মানুষ আমাকে দেখতে আসে।এলাকার সহজ সরল মানুষদের কথা মন দিয়ে শুনি। তাদের সুুখ দু:খের কথা শেয়ার করে। যথাসাধ্য আমি তাদের সহযোগীতা করি।

রবি চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে ফরেস্ট অফিস রোড পাশ করাই। কিন্তু এবার গিয়ে দেখলাম সড়কের বেহাল অবস্থা। খুব কষ্ট লাগলো। কারণ খুঁজতে গিয়ে পেলাম বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কের এই অবস্থা।আর দেরি না করে ডিসি মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে যোগাযোগ করি। বাশঁখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজ ভাই আমাকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার বাশঁখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাথে কথা বলি। পরে আজকে তিনি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে শুনে খুব ভালো লাগলো। আমি এজন্য তাকে এবং বাশঁখালী থানার ওসিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

পুইছড়ি সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য সমাজ সেবক আরিফ উল্লাহ চৌধুরী বলেন, যেখানে অন্যায় সেখানে আমরা থাকবো। এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।

এমআই/

এই বিভাগের আরও খবর