chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বাসা ভাড়ার জন্য দেওয়া চাপ ফিরে এল বাড়িওয়ালার ঘাড়ে

 নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় তিন মাস ধরে ঘরে বন্দী সাধারণ মানুষ। আয়-রোজগার কমে যাওয়ার পাশাপাশি আনুষাঙ্গিক খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফলে কেউ কেউ শহরের বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন গ্রামের দিকে। এতে প্রতিদিন খালি হচ্ছে কোনো না বাসা। অন্যদিকে, খালি হওয়া এই বাসাগুলো আর ভাড়া হচ্ছে না সহজে। একে তো বাসা খালি, আবার দিতে হচ্ছে গ্যাস বিল ও হোল্ডিং ট্যাক্স। এ নিয়ে কঠিন সমস্যায় পড়েছেন বাড়িওয়ালারা।

সরেজমিনে, নগরীর বাকলিয়া, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাট, চকবাজরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশিরভাগ বাড়ি ও গলির মুখে ঝুলানো আছে, ‘ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে’ ভাড়াটিয়া চেয়ে ‘টু-লেট’ বা ‘বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে’ এ ধরনের লেখা। তবে এ ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়েও ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চকবাজার এলাকার হাসিনা বেগম নামের এক বাড়িওয়ালা।

তিনি বলেন, সেমিপাকা এবং ফ্ল্যাট মিলিয়ে তার ১৫ টি বাসার বাসা মধ্যে ৭ টি বাসায় ভাড়াটিয়া আছে। বাকী বাসা গুলো খালি পড়ে আছে কয়েক মাস ধরে। ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না সহসা। অন্যান্য সময়ে বাসা খালি হলেও এতদিন ভাড়া না হয়ে থাকেনি।
নগরীতে ৬০ লক্ষ মানুষ বসবাস করলেও এদের অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এখানে বসবাস করছে। যার বেশিভাগই নি¤œ আয়ের মানুষ। মাসিক বা দৈনিক আয়ের উপর ভিক্তি করে জীবন যাপন করছে। অন্য দিকে নগরীর স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশির ভাগেরই আয়ে একমাত্র উৎস বাসা ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ। বাসা ভাড়া না হলে এদের আয়ের পথও বন্ধ হয়ে। কেউ কেউ ভাড়া কমিয়ে দিয়েও ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

নগরীর বাকলিয়া এলাকার বাড়িওয়ালা আনোয়ার বলেন, আমার ১২ টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৭ টি খালি আছে। বাকি ৫ টিতে ভাড়াটিয়া থাকলেও গত তিন যাবৎ তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ভাড়া পাইনি। আগের চেয়ে প্রতিটি ফ্ল্যাট প্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়া কমিয়ে ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতে প্রতি ফ্লাটের বিপরীতে গ্যাস বিল ও হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই ফ্ল্যাটগুলোর ভাড়া থেকেই আমার সব ধরনের খরচ বহন করতে হয়। এ অবস্থায় আমার পক্ষে জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি ভাবে যদি করোনাকালীন এই সময়ে খালি বাসাগুলোর হোল্ডিং ট্যাক্স ও গ্যাসবিল মওকুফ করা হতো তাহলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হতো।

এ ব্যাপারে সমাজকর্মী ড. ইদ্রিস আলী বলেন, চট্টগ্রাম শহরে মূলত দুই ধরনের বাড়িওয়ালা আছে। কতগুলো বাড়িওয়ালা আছে ব্যবসায়ী শ্রেণী, ব্যবসার পাশাপাশি শহরে তার চার-পাঁচটা বাড়ি আছে। তিনি বাড়ি ভাড়ার উপর তেমন নির্ভরশীল নয়। সেক্ষেত্রে তিনি চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ভাড়াটিয়াদের বাসা যতটুকু সম্ভব কমিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে বাড়িওয়ালাদের একটি অংশ শুধুমাত্র বাড়িভাড়া উপর নির্ভরশীল। বাড়ি ভাড়া থেকেই তাদের সব ধরনের খরচ মেটাতে হয়। ফলে তারা ভাড়াটিয়াদের ভাড়ার জন্য চাপ দিয়েছে এবং ভাড়া দিতে না পেরে ভাড়াটিয়ারা বাসা ছেড়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার বা সিটি কর্পোরেশন চাইলে শুধুমাত্র সে সমস্ত বাড়িওয়ালাদের বড়ি ভাড়ার উপর নির্ভর করতে হয়, তাদের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস বিল ও আনুষাঙ্গিক খরচ মওকুফ করতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর