ছদ্মবেশে ডাকাতি, ৬ সদস্য গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের সামনে ছদ্মবেশে ঘোরাঘুরি করে ব্যাংক হতে আগত বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে তাদের পিছু নেয়। এই কাজে তাদের নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি বেদীর(সোর্স) ভূমিকায় থাকে। বেদীর কাজ হলো কোন ব্যক্তি টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যাচ্ছে তাকে অনুসরন করা। অন্যরা বেদীকে অনুসরন করিয়া ঘটনাস্থলের আশেপাশে অবস্থান করে। বেদীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে বেদী ঘটনাস্থল থেকে সরে গিয়ে অন্যদের তথ্য সরবরাহ করে।
অন্যরা তখন তাদের সাথে থাকা সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেল যোগে ঐ সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির পিছু নেয়। পিছু নিতে নিতে টাকাওয়ালা ব্যক্তিটি যখন পায়ে হেটে কিংবা কোনো বাহন যোগে কোনো নির্জন জায়গায় চলে আসে তখন আসামীরা সকলেই তাকে ঠেক দিয়ে তাকে অস্ত্র ছোরার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে সব কিছু লুন্ঠন করে দ্রুত গতিতে ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়ে। এই প্রক্রিয়ায় আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে নগরীতে ডাকাতি করে আসতেছে।
গত ১৬ জুন কোতোয়ালী থানাধীন জামিয়াতুল ফালাহ পশ্চিম গেইট হতে মোঃ ফারুক আহাম্মদ নামীয় একজন ব্যক্তির কাছ থেকে উল্লেখিত আসামীগন জোর পূর্বক পাঁচ লক্ষ টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয় মর্মে বাদী অত্র কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে। বাদীর তথ্যের বিশ্লেষনে জানা যায় আসামীগন দুইটি মটরসাইকেল যোগে মোট ছয় জন বাদীর সিএনজিকে ঠেক দিয়া বাদীর নিকট হইতে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
মামলা রুজুর পর তদন্তে নেমে টিম কোতোয়ালী বাদীর অফিস, টাকা উত্তোলনের স্থান তথা এক্সিম ব্যাংক সিডিএ এভিনিউ শাখার আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় বাদীর অফিসের আশেপাশে তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ও ব্যাংকের আশেপাশে দুইজন অজ্ঞাতনামা বাদীর ব্যাংকের প্রস্থান সময় পর্যন্ত এলোমেলোভাবে ঘোরাঘুরি করতে থাকে।
পরবর্তীতে বাদী তার অফিস হতে সিএনজি যোগে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার পথে উপরোক্ত ব্যক্তি গন আরো এক ব্যক্তি সহ দুইটি মোটরসাইকেল সহযোগে বাদীকে অনুসরন করতে থাকে এবং সর্বশেষ উক্ত মোটরসাইকেল দুইটি ওয়াসা মোড়ে জামিয়াতুল মসজিদের গেটে বাদীর সিএনজি কে ঠেক দিয়া বাদীর কাছ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামীদের সংগৃহিত ভিডিও ফুটেজ ও তথ্যের উপর ভিত্তি করে উপরোক্ত ডাকাত দলের এক সদস্য মাসুদুর রহমান (৪০) কে গতকাল দুপুর কর্ণফূলী থানা এলাকা হতে আটক পরবর্তি ভিডিও ফুটেজে সে নিজেকে সনাক্ত ঘটনার স্বীকারোক্তি দেয়।
পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তিতে ওয়াসা মোড় এলাকা হতে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময়
মোঃ কামাল হোসেন (৩০), মোক্তার হোসেন (২২), সাদ্দাম (২৬), শের আলী (৩২) ও মোঃ এরশাদ(৩৩) আটক করা হয়। সাহাবুদ্দিন পালিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা সকলেই পূর্বের ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকার করে। আসামীদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আনোয়ারা বৈরাক এলাকা হইতে ঘটনায় ব্যবহৃত অপর একটি এ্যাভেঞ্জার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। উক্ত মোটরসাইকেল টি আসামী মাসুদ তার এক বন্ধুর নিকট থেকে ধার নেয় মর্মে স্বীকার করে।
এরশাদের বাসায় অভিযান পরিচালনা করিয়া ডাকাতির ৩৫ হাজার টাকা ও আসামী কামালের বাসায় অভিযান পরিচালনা করিয়া ডাকাতির ১৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে ১ টি দেশীয় তৈরী এলজি, ০২ রাউন্ড কার্তুজ, ০৩ টি টিপ ছোরা, দুটি মোটরসাইকেল, নগদ ৫০ হাজার টাকা।