প্রতিবেশীর কোপে কেটে গেল মেরুদন্ড!
বাঁশখালী প্রতিনিধি : বাঁশখালীতে বসতভিটার উপর দিয়ে শৌচাগারের পানি নিষ্কাশনে বাঁধা দেওয়ার জেরে এক শিক্ষকের পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) দুপুর ২টায় পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হায়দারি ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি হায়দারি ঘোনা এলাকার আলহাজ্ব মজু মিয়ার পুত্র। আহত অন্যান্যরা মাস্টার আজিজুল হক, পুত্রবধু সেলিনা আক্তার। আজিজুল হক পুঁইছড়ি ইজ্জতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ পুঁইছড়ি হায়দারি ঘোনার বাসিন্দা মজু মিয়ার পুত্র মাষ্টার আজিজের বসতভিটার উপর দিয়ে মৃত জাফর আহমদের মেয়ের জামাই মোহাম্মদ মোস্তাক শৌচাগারের পানি নিষ্কাশন করার চেষ্টা করেন। মাস্টার আজিজের ভাই নাছির বাঁধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে, শালী, স্ত্রী নিয়ে দা, কিরিচ, ছুরি দিয়ে নাছিরকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন মোস্তাক। নাছির উদ্দিনের চিৎকারে তার ভাই আজিজ এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকেও ধারালো দা,ছুরি, কিরিচ দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ফেলে। তখন তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে বাঁশখালী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক নাছিরের অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে নাছিরের বড়ভাই ভাই মাস্টার আজিজ এ প্রতিবেদককে বলেন, নাছিরের কোমরের উপরিভাগে কোপ দিয়ে মেরুদণ্ড সহ কেটে ফেলে। এমনকি আমার স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে লাঠি দিয়ে মারধর করে তার কাপড়চোপড় টানাহেঁচড়া করে ছিঁড়ে ফেলেন মোস্তাকের লোকজন।
আমি বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে বাঁশখালী থানায় এসআই নাজমুল হকের কাছে একটি এজাহার দায়ের করেছি। কিন্তু আমার ভাইয়ের মেডিকেল রিপোর্ট না আসায় মামলা করিনি।
তিনি বলেন,আমরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনে শিক্ষক। আমরা আমাদের মানসম্মানের ভয়ে মোস্তাকের অত্যাচারে ঘরবাড়ি ফেলে স্কুলের পাশে ভাড়া বাসায় থাকি। এখন মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় আমাদের বাড়িতে অল্পদিনের সময় কাটানোর জন্য চলে আসি। এমন অবস্থায় মোস্তাক তার দলবল নিয়ে আমাদের ভিটার উপর শৌচাগারের পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করে। এতে আমরা বাঁধা দিলে মোস্তাক ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমার ছোট ভাই নাছিরের অবস্থা ভালো না। সে এখন চমেক হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডের ১৫ নং বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার বিচার ও আমাদের নিরাপত্তা চাই। এখনো তারা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পুঁইছড়ি ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন পুতন বলেন, আমি তাদের দু’পক্ষের বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে বিচার করার আশ্বাস দিয়েছিলাম। প্রেমবাজার এলাকায় আরেকটি বিচারের কাজ থেকে আসতে আসতে তারা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। আমি ওখান থেকে এসেই বিচার করতাম। এই ঘটনায় নাছির গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার নাজমুল হক বলেন, পুঁইছড়ি হায়দারি ঘোনার এলাকায় সংঘটিত ঘটনায় মাস্টার আজিজ এজাহার দায়ের করেছে। আগামীকাল ঘটনাস্থলে আমাদের ডিউটি অফিসার যাবে তদন্ত করার জন্য।