নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সংসদে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালকমন্ডলীর পক্ষ থেকে সভাপতি মাহবুবুল আলম এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত এ বাজেটকে জীবন ও জীবিকার বাজেট, ব্যবসাবান্ধব এবং জনবান্ধব হিসেবে উল্লেখ করে এ বাজেট অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানায়।
বাজেটে মোট ব্যয় ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, মোট আয় ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯ শত ৯৭ কোটি টাকা।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং একই সাথে বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেট সময়োপযোগী। স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা ও কৃষি খাতে ২৯ হাজার ৯শত ৮৩ কোটি টাকা এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৯৫ হাজার ৪শত ৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান ইতিবাচক। তবে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সততা, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৩২ কি.মি. দীর্ঘ টানেলের ৫১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা-লাকসাম হয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডাবল ট্র্যাক দ্রুতগতির রেললাইন বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ করা হয়। সমুদ্রবন্দর সমূহের পণ্য হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো ইয়ার্ড, বে-টার্মিনাল ও বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। আমরা এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী জানাই।
মাহবুবুল আলম বলেন, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আয়কর থেকে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা, মূসক থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ২০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি, সর্বনিম্ন কর হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করায় করদাতাদের উৎসাহিত করবে। মহামারীর কারণে রিটার্ণ দাখিলে ব্যর্থ করদাতাদের জরিমানা ও সুদ ব্যতীত সময়সীমা বৃদ্ধি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
আগামী ১লা জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের আয়কর রিটার্ণে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও এপার্টমেন্ট এর উপর নির্দিষ্ট হারে এবং নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড, সিকিউরিটিজ এবং পুঁজি বাজারে বিনিয়োগের উপর ১০শতাংশ কর প্রদান করে বৈধ করার সুযোগকে স্বাগতঃ জানিয়ে চেম্বার সভাপতি সবাইকে এ সুযোগ গ্রহণের আহবান জানান এবং এর ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত হয়ে তারল্য সংকট নিরসনে সহায়ক হবে বলে মনে করেন। স্থানীয় উৎপাদনমূখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা, রেয়াতের সময়সীমা ২ কর মেয়াদ থেকে বৃদ্ধি করে ৪ মেয়াদ করায় দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে ৫০ লক্ষ মানুষকে নগদ অর্থ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ১০০টি উপজেলায় সকল দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হবে এবং ৫ লক্ষ নতুন উপকারভোগীর জন্য ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হবে। প্রতিবন্ধী সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১৮ লক্ষে উন্নীত করা হবে এবং এ বাবদ ২২৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হবে। এসব কর্মসূচী দেশের অতি দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় সহায়ক হবে।