chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

করোনা সংক্রমণের শঙ্কায় দেশে ফিরে গেলেন ১১০ জন আফগান শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক মহামারী করোনার ছোবলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে মর্মে নিজ নিজ দেশের প্রেরিত বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ফিরিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দেশ সমূহ। তারা মনে করছেন যে,করোনা প্রবল বেগে আগ্রাসন করতে পারে বাংলাদেশে তাই তারা অনেকটা সঙ্কা নিয়েই ফিরে যাওয়াটা সমুচিত বলে মনে করছে। ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের ফেরত নিয়েছেন বিভিন্ন দেশ। শিক্ষার্থী ছাড়াও বাংলাদেশে কর্মরত রয়েছেন এমন অনেক দেশের নাগরিক তাদের নিজস্ব সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্ব স্ব দেশে ফিরে গেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার ৬ জুন সকাল সাড়ে আট টায় চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন চট্টগ্রামস্থ আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন বিদ্যাপীঠ “এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন”এর আফগানিস্তানের ১১০ জন শিক্ষার্থী ।

 

 

বাংলাদেশে অবস্থানরত আফগানিস্তানের দূতাবাস থেকে সরাসরি তদারকির মাধ্যমে তাদের এই ফিরে যাওয়া কর্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিমান বন্দরে আফগান দূতাবাসের সহকারী ওয়াইস রেজা বলেন, আমরা আমাদের দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর তাছাড়া বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন নাজুক হয়ে যাচ্ছে এমতাবস্থায় আমাদের দেশের সম্পদ কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের বিপদগ্রস্ত করতে পারিনা তাই এমন উদ্যোগ নিয়েছে আফগান সরকার।
ফিরে যাওয়া শিক্ষার্থী ভেনা মিত্রা, এন্যা, নাফিজা আফরোজ, সুসরমী হেমাদ বলেন, আমরা এই বাংলাদেশের প্রকৃতির প্রেমিক হয়ে গেছি, এমনই সুজলা সুফলা বাংলা পৃথিবীর কোথাও নেই, এখানকার মানুষ জনপদ ও সাগর পাহাড় সব কিছুই যেন মমতায় ঘেরা, আফগানিস্তানে গিয়ে খুব বেশি মিস করবো বাংলাদেশকে ও বিভিন্ন দেশের সহপাঠীদেরকে, যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তবে আবারও ফিরে আসবো এই সোনার বাংলায়।

বিদায় দিতে আসা এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন এর কর্তব্যরত কান্ট্রি কোর্ডিনেটর ও প্রধান সমন্বয়ক জুমানা আবুওয়ালা বলেন, আমরা বরাবরই নিরুপায় হয়ে আমাদের প্রিয় ছাত্রীদের কে পড়াশোনার মাঝখানেই বিরতি দিয়ে বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমণের ভয়ে সকল প্রকার ঝুঁকি এড়াতে তাদের স্ব স্ব দেশে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবারও তাদের ফিরিয়ে আনবো, তবে এখন আমরা তাদের অবশিষ্ট কিছু পাঠ্যক্রম বা পাঠদান অনলাইনে পরিচালনা করবো ক্যাম্পাস থেকে, আশা করছি এই মহামারী সহসা উত্তরণ হবে । তিনি আরও বলেন, মাঝ পথে তাদের ফিরে যাওয়ার সকল ব্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার যৌথ ভাবে বহন করছে ।

সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে ব্যাক্তিগত অভিমত জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন’ এর চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম আক্তার আমিরী বলেন, বাস্তবতা হল আমরা প্রকৃতির কাছে জিম্মি, চাইলেই এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়, এটা সাধারণ কোন যুদ্ধ নয়, এটি একটি অদৃশ্যের সাথে সঠিক আচরণের যুদ্ধ, সমাজের অনৈতিক ও অপসঙ্গের সাথে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নের যুদ্ধ, এতে জিততে হলে অবশ্যই দরকার ইতিবাচক মনোভাব ও অন্যকে নিরাপদ বা বাঁচানোর মানসিকতার পরিবর্তন তবেই সম্ভব এই মহামারী নামক অদৃশ্য অপশক্তি থেকে উত্তরণ ।