বাজারে এলো মধুমাসের কাঁঠাল
নিজস্ব প্রতিবেদক: কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠাল পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই আছে আছে। কাঁঠালের রসালো কোষ খেতে খুব মিষ্টি। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে মৌসুমী ফল কাঁঠাল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁঠাল এনে স্তুপ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে পথচারীরা নিজেদের পছন্দের কাঁঠাল নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর রিয়াজউদ্দীন বাজার, ফিরিঙ্গি বাজার ও কদমতলী এলাকায় কাঁঠালের পসরা সাজিয়ে বসেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারীতে মাঝারি সাইজের প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। বড় সাইজের প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।
পাইকারি বিক্রেতা রিদুয়ান জানান, আমরা প্রতি বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কাঁঠাল নিয়ে আসি। যদিও এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে বেঁচা-বিক্রি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তারপরও জীবিকার তাগিদে নিয়ে আসা।
এসব পাইকারি দোকান থেকে কিনে ভ্যানে করে নগরীর অলি-গলিতে কাঁঠাল বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতা কায়কোবাদ জানান, এখন মৌসুের প্রথম দিকে হওয়ায় কাঁঠালের দামএকটু বেশি। করোনার কারণে সাধাণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তাই এ বছর লাভ কম হচ্ছে।
জৈষ্ঠের শেষের দিকে গ্রামের প্রতিটি ঘরে কোণায় সুগন্ধি ছাড়ায় পাকা কাঁঠাল। তবে শহুরে জীবনে গ্রামের সেই চিরচেনা প্রাকৃতিক দৃশ্য অনুপস্থিত। ব্যস্ত শহরে পাকা কাঁঠালের স্বাদ নেওয়ার ফুরসত নেই নাগরিকদের।
এছাড়াও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফলটি আলসার, ক্যানসার, বার্ধক্য প্রতিরোধ, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম।
কাঁঠালের হলুদ কোষ ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ। অপুষ্টিজনিত সমস্যা রাতকানা এবং রাতকানা থেকে অন্ধত্ব প্রতিরোধ করার জন্য কাঁঠাল খুবই উপযোগী। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে ত্বক খসখসে হয়ে যায়। গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ান এমন মায়েদের। কাঁঠাল দরকারি ফল।
কাঁঠালে ভিটামিন সি এবং কিছুটা বি রয়েছে। ভিটামিন ‘সি’ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দাঁতের মাড়ি শক্তিশালী করে। কাঁঠালে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস আছে যা আলসার, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় কাঁঠাল মানবদেহের জন্য উপকারী। এটি পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলটিতে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম হাড় গঠন ও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
কাঁচা কাঁঠাল আমিষ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ তরকারি। কাঁঠালের বিচি বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়। তরকারিতেও ব্যবহার করা যায়।
হাঁপানি রোগের উপশমে কাঁঠাল গাছের শেকড় সিদ্ধ করে খেলে উপকার হয়। এছাড়াও জ্বর, চর্মরোগের সমস্যা এবং ডায়রিয়া নিরাময়ে কাঁঠালের শেকড় কার্যকরী।